ভারতীয় সময় বুধবার মধ্যরাতে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এই ‘সার্জিক্যাল অ্যাটাক’ চালায় ভারতীয় সেনা। ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ শেষ হয় অভিযান। ভারতীয় সেনারা যেখানে অভিযান চালিয়েছে, নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে তার দূরত্ব ২-৩ কিলোমিটার। এখানে থাকা জঙ্গি ক্যাম্পগুলিতে প্রচুর সংখ্যক জঙ্গি ছিল বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক-সূত্রে খবর। এইসব জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণরেখা দিয়ে কাশ্মীরে ঢোকানোর চেষ্টা চলছিল। কারণ, উরি হামলার পরে এমন ২০টি জঙ্গি অনুপ্রবেশের ঘটনাকে ব্যর্থ করেছিল ভারতীয় সেনা।
ভারতীয় সেনা-সূত্রে যে খবর মিলছে, তাতে বুধবার রাতে সাড়ে বারোটা নাগাদ অভিযান শুরু হয়। মূলত ভারতীয় সেনাবাহিনী বিশেষ প্রশিক্ষিত স্পেশাল ফোর্সকে এই অভিযানে নামানো হয়েছিল। এক একটি ইউনিটে ২০ জন কম্যান্ডোকে রাখা হয়েছিল। প্যারাশ্যুট নিয়ে ভারতীয় সেনারা নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে নেমেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
এখনও পর্যন্ত যা তথ্য মিলেছে, তাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ভিমবার, হটস্প্রিং, কেল অ্যান্ড লিপা সেক্টরে এই অভিযান চলে। এই ‘সার্জিক্যাল অ্যাটাক’-এর জন্য আগে থেকেই টার্গেট ঠিক করে নেওয়া হয়েছিল। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, নিয়ন্ত্রণরেখার ৫০০ মিটার থেকে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে এই হামলা চালানো হবে। এখানে থাকা জঙ্গি শিবিরগুলির প্রত্যেকটিতে অন্তত ১০ জন করে জঙ্গি ছিল। যা খবর, তাতে মোট ৭ থেকে ৮টি ক্যাম্পকে ধ্বংস করা হয়। সবমিলিয়ে বলা হচ্ছে, অন্তত ৪০ থেকে ৪৫ জন জঙ্গি মারা পড়েছে। জঙ্গিদের সেফগার্ড দিতে আসা পাকিস্তানি রেঞ্জার্সের অন্তত ৯ জওয়ানও মারা পড়ে বলে সেনাবাহিনীর সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
ড্রোন ক্যামেরায় এই সম্পূ্র্ণ হামলার ভিডিও রেকর্ডিংও করা হয় বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, পাকিস্তান সীমান্ত-লাগোয়া ভারতীয় ভূখণ্ডের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে সেনাবাহিনী। সীমান্ত-লাগোয়া সমস্ত স্কুল তিন দিনের জন্য বন্ধ রাখতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে।
বুধবার নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় সেনার ‘সার্জিক্যাল অ্যাটাক’-এ যত সংখ্যক জঙ্গি মারা পড়েছে, এর আগে কোনও একটিমাত্র ‘কোভার্ট অপারেশন’-এ এত সংখ্যক জঙ্গি মারা পড়েনি।
click